Guliakhali Sea Beach Tour-গুলিয়াখালি সি বিচটাই দেখে আসি

চারিদিকে শুধু গুলিয়াখালি সি বিচের মহিমা শুনতে শুনতে মনে হলো গুলিয়াখালি সি বিচটাই দেখে আসি। কম খরচে ঢাকা থেকে এক দিনের ট্যুরে এরচেয়ে ইউনিক জায়গা আর হয় না। তাই হুট করে দুপুর বেলা এই চিন্তা মাথায় আসার পর বিকেল বেলাই টিকেট কেটে রাত ১১ঃ৩০ টায় বাসে উঠে পড়লাম। বৃহস্পতিবার হওয়া সত্ত্বেও ঢাকার বুকে এক ফোটা জ্যামও না পেয়ে ভয়ই পেয়ে গেলাম সামনে না জানি কি আছে। মিরপুর থেকে সায়েদাবাদ পৌঁছে গেলাম ১ ঘন্টার মধ্যে। হাইওয়েতে গিয়ে আশঙ্কাই সত্যি হল। উথাল পাথাল জ্যাম। গাড়ি ৫ মিনিট আগায় আর ১ ঘণ্টা করে বসে ধাকে। কুমিল্লা পৌছতে পৌছতে সকাল ৭ঃ০০ টা!!!!! অথচ আশা ছিল সিতাকুন্ড গিয়ে সূর্যোদয় দেখবো! যাই হোক সিতাকুন্ড নামলাম ঠিক সকাল ৯ টায়। কুমিল্লার পর গাড়ি যেন প্লেনের মত উড়ে গেল বাকি টুকু পথ! যাই হোক সিতাকুন্ড বাজারে হালকা নাস্তা করে সিএনজি ভাড়া করে গেলাম গুলিয়াখালি সি বিচ। সিএনজি ১০০-১৫০র নিচে যাবেই না! অথচ আমরা মানুষ মাত্র ২ জন! কপালগুনে এক সিএনজিআলাকে পেলাম যে অলরেডি ২ জন স্থানিয় লোককে নিয়ে ঐদিকেই যাচ্ছে। 


Image may contain: tree, sky, plant, grass, outdoor and natureImage may contain: tree, sky, outdoor and natureImage may contain: sky, cloud, tree, plant, mountain, outdoor and natureImage may contain: tree, grass, sky, plant, outdoor and nature



৮০ টাকায় আমাদের সাথে নিতে রাজি হল। বিচে যেতে যেতেই শুরু হল চরম বৃষ্টি! আর বিচে পৌছতে পৌঁছতে বৃষ্টি শেষ! কিন্তু যা হওয়ার হয়ে গেছে। সিনএনজি থেকে নামার পরে দেখি সি বিচ পর্যন্ত যেতে ২-৩শ গজ রাস্তা কাদার সাগর! হাটু পর্যন্ত প্যান্ট গুটিয়ে খালি পায়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নাই! কাদার ওপারেই সেই বিখ্যাত বিচ দেখা যাচ্ছে। মনের ভেতরে আকুপাকু করছে! তাই সেইভাবেই হাঁটা। মাঝপথে দেখি একটা বাঁশের ছোট্র সেতু। তার পাশে কয়েকজন লোক দাড়িয়ে ১০ টাকা করে চাঁদা তুলছে! হাটু পর্যন্ত কাদা দেখিয়েও কোন লাভ হল না। টাকা দিতেই হল! যাই হোক বিচে গিয়ে মনে হল সব কষ্ট সার্থক। এরকম দৃশ্য শুধু বাংলাদেশ না, পৃথিবীর আর কোথাও আছে কিনা সন্দেহ (বাসায় এসে গুগল করে অনেক খুজেছি। পাই নাই)। মনে হচ্ছিল অন্য কোন গ্রহের কোন বিচে এসে পড়েছি সেখানে সবই সবুজ!!!! আরেকটা জিনিস চোখে পড়ল লাখ লাখ কাঁকড়া আর তাদের কোটি কোটি গর্ত! প্রতি ইঞ্চিতে কাঁকড়ার গর্ত! অবশ্য ভয়ের কিছু নেই। এগুলো খুব ছোট ছোট আর মানুষ দেখলেই গর্তে ঢুকে যায়! আর দেখলাম গরু। স্থানিয় লোকজনের গরু। ফ্রিস্টাইলে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ঘাস খাচ্ছে। এত সুন্দর ঘাস আর কোথাও পাওয়া সম্ভব না। তাই এরা সবাই বেশ নাদুশ নুদুশ। বিচের দুই পাশেই ঘন জঙ্গল। স্থানিয় লোকজন বলল ওখানে হরিণ আছে। তবে মানুষের ভয়ে দিনের বেলায় বাইরে আসে না। বিচ থেকে পেছন দিকে তাকালেই চন্দ্রনাথ পাহাড় দেখা যায়। সেও এক অসাধারন দৃশ্য। কয়েক ঘণ্টা বিচে থেকে ফিরে এলাম। পায়ের কাদা ধোয়া আর গোসলের জন্য পেলাম একটা পরিষ্কার পানির পুকুর, বিচ সংলগ্ন গ্রামের মধ্যেই। যেখানে সিএনজি থেকে নেমেছিলাম ফেরার পথে তার বাম পাশেই। সেই সিএনজি স্ট্যান্ডেই আবার খাবার হোটেল আছে ২-৩ টা। গোসল করে খেতে বসলাম। আমরা যেটায় বসেছি তাতে মেনু ২ টাই- চিকেন খিচুরি উইথ ডিম আর ভাত উইথ ইলিশ মাছের তরকারী। খাবার খুব অসাধারন না হলেও দামের তুলনায়, পরিমাণে আর এতক্ষন ঘোরাঘুরির পর খেয়ে পেট ভরে গেল। ৭০ টাকার খিচুরি একজনে খেয়ে শেষ করা কষ্ট! আর ইলিশ আর ভাত ৮০ টাকা। ফেরার পথে সিএনজিআলাদের ডাকাতির থেকে আর বাঁচতে পারলাম না। ১৫০ টাকার এক টাকা কমে আসবে না। শেষ পর্যন্ত ২ জনে তাই দিয়েই আসলাম। সিতাকুন্ড থেকে ঢাকার বাস ধরলাম বিকেল ৪ টায়। ফেরার পথে তেমন জ্যাম ছিল না। মিরপুর পৌছে গেছি ১১ টার মধ্যে।
সতর্কতাঃ বিচে যাওয়ার পথে একটা সাপ দেখেছি। সাপ দেখলে ঘাবড়ানোর কিছু নাই। সাপের একেবারে কাছে গিয়ে হঠাৎ সাপ আবিস্কার করলে দাঁড়িয়ে থাকবেন যতক্ষন না চলে যায় আর একটু দূরে থাকতেই দেখলে পিছিয়ে এসে অন্য দিকে দিয়ে ঘুরে যাবেন। সাপ দেখে আপনি ভয় পাবেন না। আপনার কোন মুভমেন্ট দেখে সাপ যাতে ভয় না পায় সেটাই মাথায় রাখবেন সবসময়! 
আর বিচে অল্প কয়েকটা ছোট ছোট দোকান গজিয়েছে। যেখানে চিপস, পানি আর ডাব পাওয়া যায়। যাই খান দয়া করে বিচে ফেলে আসবেন না। বিচ থেকে ফিরে যেখানে হোটেল আছে সেখানে ময়লা ফেলার ঝুড়ির মধ্যে ফেলবেন।

Sitakunda tour -পাহাড়,ঝর্না আর সমুদ্রের টানে সীতাকুণ্ডের পথে পথে.

অনেকদিন ধরে কোথাও যাব যাব করছি। ইট আর বালুর শহর আর ভাল লাগেছে না। তারপর আবার ফেজবুকে লাস্ট ৬ মাস সীতাকুণ্ডের পোস্ট পরতে পরতে লোভ লেগে গেল। যেই প্লান সেই কাজ আমরা ৯ জন মিলে রওনা হলাম ১৬ জুলাই রাতের মেইল ট্রেনে সীতাকুণ্ডের উদ্দেশ্যে। যেহেতু পুরো ২দিন থাকবো সেহেতু একটু প্লান করেই বের হয়েছিলাম। অনেক খোজা খুঁজির পরে যেসব তথ্য পেয়েছি তা ঠিক আছে কিন্তু একটা পোস্টে সবগুলো ছিল না। সব আলাদা আলাদা। তাই চিন্তা করলাম মোটামুটি কিছু প্লেস নিয়ে লিখি যাতে মনে হবে আমরা পাহাড়, ঝর্না আর সমুদ্রের সংমিশ্রনে সীতাকুণ্ডে একটা পরিপূর্ণ ট্যুর দিয়েছে। আমি কথা বলতে বলতে সবগুলো প্লেসের বিস্তারিত বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করবো। কতটুকু পারবো তা জানি না। কিন্তু চেষ্টা করব। পার্ট বাই পার্ট দেয়া আছে আমার প্লানের। টাকার হিসেবও লেখার ভিতর পাবেন। আপনারা চাইলে অন্য প্লানও করে ঘুরে আসতে পারেন। ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
১৭জুলাই সকাল ৭টা। ট্রেন সীতাকুণ্ড রেলস্টেশন। বাইরে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। আহ আহ মনে হচ্ছিলো আমাদের স্বাগত জানাতেই এ বৃষ্টির আয়োজন এই শহরে। ট্রেন থেকে নেমে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই হাটা দিলাম হোটেলের খোঁজে। ডিটি রোড সীতাকুণ্ডে হোটেল পেয়েও গেলাম মাত্র ২০০০ টাকার মধ্যে। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সারতে সারতে ৮.৩০ এর দিকে রওনা হলাম আমাদের ট্যুরের প্রথম অভিযানে। 








#চন্দ্রনাথ_অভিযান_০১
সীতাকুণ্ড বাজার থেকে জনপ্রতি ২০টাকা সিএনজি ভাড়া করে সোজা চন্দ্রনাথের পাদদেশে যখন পৌছালাম তখন সকাল ৯টা। চাইলে রিজার্ভও যাওয়া যায়। সময় নষ্ট না করে ২০ টা জনপ্রতি ভাড়া দিয়ে বাশ নিলাম বাশ। ১০ টাকা ভাড়া আর ১০ টাকা সিকিউরিটি মানি। পাহাড় থেকে নামার পরে বাশ ফেরত দিলে ১০ টাকা ব্যাক করেবে। টাকা ফেরত না নিয়ে বাশ নিয়েও আসা যায়। তাতে কোন সমস্যা নেই। তারপর আমাদের হাটা শুরু চন্দ্রনাথের উদ্দেশ্যে। সামনে কিছুদূর আগাতেই ২টা রাস্তা, একটা বামে আর একটা ডানে। ডানে সিরি আর বামে কাঁচা রাস্তা। বামের পথ দিয়ে উঠাটাই ভাল। যারা আগে কখনো পাহাড়ে উঠেননি তারা অন্য রকম একটা স্বাদ পাবেন এই রাস্তায়। একদম পাহাড়ি স্বাদ। সাথে জোর গলায় রণ সঙ্গীত আপনাকে উপরে উঠতে উদ্বুদ্ধ করবে। আপনার শক্তি জোগাবে। আমারা জোরে জোরে চল চল চল, ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল, নিম্ন উতালা ধরণি তল, অরুণ প্রাতের তরুণ দল, চল চল চল গাইতে গাইলে উঠতে ছিলাম। আশেপাশের পরিবেশ আপনাকে বাধ্য করবে পাহাড়ে উঠার কষ্ট ভুলতে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আসলে লিখে বোঝান সম্ভব না। ওটা ফিল করার বিষয়। কিছুদূর উঠলেই একটা ছোট ঝর্না পরবে। তারপর কিছুদূর উঠলেই অন্য একটা ছোট মন্দির পরবে। এটা চন্দ্রনাথের পাশের পাহাড়ের চুড়া। এখান থেকে যে ভিউ গুলো চোখে পরবে তা সত্যিই অসাধারন। এখানে কিছুখন রেস্ট নিয়ে আবার পাহাড় বাওয়া শুরু। সাথে অবশ্যই খাবার পানি স্যালাইন ও শুকনা খাবার শহর থেকেই কিনে আনবেন। পাহাড়ে পানির অনেক দাম। আর প্রচুর পরিমাণ তৃষ্ণা পায় পাহাড়ে উঠলে। তাই পরিমাণ মত পানি সাথে রাখবেন। পাহাড়ি পথে রেস্ট নেয়ার জন্য অনেক গুলো টং ঘর আছে চাইলে অগুলোতেও রেস্ট নেয়া যায়। তারপর কিছুটা দুর্গম কিন্তু সুন্দর পথ পাড়ি দিয়েই আমরা আমাদের চূড়ান্ত চুড়ায়,চন্দ্রনাথের চুড়ায় যখন পৌঁছাই তখন ১০.২০। উপরের সৌন্দর্যের মাঝে পাহাড়ে উঠার সমস্ত কষ্ট নিমিষেই কখন যে ঢাকা পরে গেল তা টেরই পেলাম না। তারপর শুধু উপভোগ আর উপভোগ। দুচোখ দিয়ে চারপাশের সবুজ উপভোগ। নামতে ইচ্ছা করেনি। মনে হচ্ছিল কিছু দিন থাকি। চোখের ক্ষুধা মিটিয়ে ১১টার দিকে নামা শুরু করলাম নিচে। এবার সিঁড়ির পথ ধরে। খাড়া সিঁড়ি তাই একটু সাবধানে নামতে হবে। তারপর শুধু সিঁড়ি বেয়ে নামা আর উপভোগ করা। এভাবে করতে করতে আস্তে আস্তে নিচে নেমে এলাম আর ১০২০ ফিটের চন্দ্রনাথ অভিযান শেষ করলাম।
#ইকো_পার্ক_অভিযান_০২ (শুপ্তধারা, সহস্রধারা)
বাশ ফেরত না দিয়েই চন্দ্রনাথের পদদেশ থকে ৪০০টাকায় (৪০ত টাকা জনপ্রতি) অটো রিজার্ভ করে সোজা ইকো পার্কের গেটে যখন আমরা তখন প্রায় ১টা। জনপ্রতি ১০ টাকা টিকেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলেই একটা অন্য রকম ফিল। পাহাড় আর ঝর্নায় মিলেমিশে একাকার ইকো-পার্ক। নিয়মিত পাখির ডাক আপনাকে মুগ্ধ করবে। ভিতরে সিএনজি পাওয়া যায় ইকো-পার্ক ঘোরা আর ঝর্না দেখানোর জন্য। আপ-ডাউন ৫০০টাকা। রেট করা। গেট থেকে ১কিলো পরে শুপ্তধারা আর ৩ কিলো পরে সহস্রধারা। আমার মত যারা প্রকৃতি প্রেমী তারা দেরি না করে সোজা হাঁটাদিন পাহাড়ি পিচঢালা পথ ধরে। হাটতে হাটতে গান গাইতে পারেন আমাদের মত। আমরা মজা করতে করতে পাহাড় বেয়ে ১ কিলো পথ পাড়ি দিয়ে শুপ্তধারা মুখে। একটু কষ্ট হয়েছিল তাই ১০ মিনিট রেস্ট নিয়েছিলাম। শুপ্তধারা দেখতে হলে আমাদের সিঁড়ি বেয়ে নামতে হবে ২২০০+ ফুট নিচে। মানে ২টা চন্দ্রনাথ নামতে হবে। দেখার প্রবল ইচ্ছা নিয়ে কষ্ট ভুলে নামা শুরু করলাম আস্তে আস্তে। সিঁড়ি শেষে ঝিরি পথ পার হয়ে সোজা বামে হাঁটা শুরু করলাম। ১০ মিনিট দুর্গম কিছু পথ পাড়ি দিয়ে যখন ঝর্না চোখে পড়লো তখনি কলিজা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। মনে হল ২২০০ ফিট নিচে নামা সার্থক। ততক্ষণে আমি শুপ্তধারার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি। সে আমাকে ডাকছে তার খুব কাছাকাছি। আমি কান পেতে স্পষ্ট তা শুনেছি অনেক বার। তারপর তার ডাকে সারা দিয়ে তার মাঝে বিলীন হয়ে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। হঠাৎ তার ঘোড় কাটলো ঘড়ির টাইম দেখে। সমস্ত মায়া ত্যাগ করে আমারা আবার ২২০০ ফুট উপরে অনেক কষ্টে উঠে এলাম। শুপ্তধারায় পাশাপাশি ৩টা ঝর্না।
পাহাড় দেখতে এসেছি কষ্টতো একটু হবেই। একটু রেস্ট নিয়ে ২ কিলো পরের সহস্রধারার উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম। উপরে উঠছি আর উঠছি। পাহাড়ি পিচঢালা পথ। এ পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হত তুমি বলতো । এই গানটা মনে মনে গাইছি আর চিন্তা করতেছিলাম কখন পথ শেষ হবে। অনেক কষ্টের পরে আস্তে আস্তে আমরা সহস্রধারার সিঁড়ির কাছে পৌছালাম। ৪৬৫টা সিঁড়ি আর প্রায় ১০৩০ ফুট নিচে নামতে হবে ঝর্নার সাথে দেখা করতে। যখন এগুলো সাইনবোর্ডে পরতেছিলাম তখনি আর দুর্বল হতে লাগলাম। প্রচণ্ড ইচ্ছা আর প্রকৃতি দেখার নেশাই শারীরিক দুর্বলতাকে জয় করে সহস্রধারার কাছাকাছি নিয়ে যেতে সাহায্য করে। ঝর্না দেখার সাথে সাথে মনে হয় আবার সব শক্তি ফিয়ে পাই। ঝর্না আর প্রকৃতি বিমহিত করছিল বার বার। আশেপাশের পরিবেশও দেখার মত। আরও কিছুক্ষণ প্রকৃতির মাঝে বুত হয়ে থেকে যখন ব্যাক করলাম তখন বিকেল ৪ টা। সোজা অটো নিয়ে সীতাকুণ্ড বাজারে। ভাড়া জনপ্রতি ২০ করে। চাইলে আপনি ইকোপার্ক থেকে হেঁটে মেইন রাস্তায় এসে লেগুনায় ৫ টা ভাড়া দিয়ে সীতাকুণ্ড বাজারে আসতে পারেন। দুপুরের খাবার খেতেই এখনে আসা। মাঝে মাঝে শুধু শুকনা খাবার আর পানি খেয়েছি।
#বাঁশবাড়িয়া_সীবিচ_অভিযান_০৩
খাওয়া দাওয়া শেষে যখন রওনা দিলাম তখন ৪.৪৫। আমরা লোকাল বাসে করে রওনা দিলাম। জনপ্রতি ভাড়া ১৫ টাকা। বাসগুলো সীতাকুণ্ড বাজার থেকেই ছাড়ে কিছুক্ষণ পর পর। সীতাকুণ্ড থকে চট্রগ্রাম দিকে এই বীচ। আপনি যদি বলেন যে আমি বাঁশবাড়িয়া সী বিচে যাব তাহলে হেলপারই আপনাকে বাঁশবাড়িয়া বাস স্ট্যান্ডে নামিয়ে দিবে। শুধু রাস্তা ক্রস করে সিএনজি নিয়ে সোজা সীবিচে। ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা করে। তখন ৫.১৫। সিএনজি থেকে নেমেই সমুদ্র দেখতে দেখতে চা পান করতে লাগলাম। তারপর সমুদ্রের নোনা পানিতে পা ভিজিয়ে ১ দিনে পাহাড়,ঝর্না আর সমুদ্র দেখার মাইফলক স্পর্শ করে ফেললাম। এএক অন্য রকম অনুভুতি। লিখে বোঝনো যাবে না। শুধু ফিল করতে হয়। সারাদিনের ক্লান্তি ম্লান হয়ে গেল সমুদ্রের স্পর্শে। সমুদ্রের সাথে একান্ত কিছু সময় ব্যয় করার পরে আবার ২০ টাকা জনপ্রতি সিএনজি ভাড়া দিয়ে মেইন রাস্তায় যখন পৌছালাম ৬.১৫। মাত্র ৩০ মিনিট টাইম আছে সূর্য অস্তের।
#কুমিরাখাট_অভিজান_০৪
মেইন রাস্তা থেকে ১০ টাকা জনপ্রতি বাস ভাড়া দিয়ে চট্রগ্রামের দিকে কুমিরা বাজার বাসস্ট্যান্ড এ নামলাম। রাস্তা ক্রস করে জনপ্রতি ১৫ টাকা ভাড়া দিয়ে অটো করে যখন ঘাটপার গেলাম তখন ৭.৫০। সূর্য অস্ত শেষ। ইচ্ছা ছিল কুমিরা জাহাজ ঘাটপার বসে সূর্য অস্তটা উপভোগ করবো। কিন্তু সময়ের কারনে তা দেখা হল না। তারপরেও সন্ধ্যার দৃশ্যগুলো অসাধারণ ছিল। বিশাল বিশাল জাহাজ রাখা কাটার জন্য। আর বিশাল লম্বা জেটি (প্রায় ১কিলো) মনে হয় মাঝ সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত। জেটির মাঝে অন্ধকারে আকাশ দেখে, তারা গুনতে গুনতে, বাদাম আর বাতাস খেতে খেতে খালি গলায় গানের জাহাজ ভাসিয়ে দিলাম। আপনি চাইলে বড়শি দিয়ে মাছও ধরতে পারেন। তবে বড়শি আগেই সঙ্গে নিতে হবে। এরকম করতে করতে যখন গানের জাহাজ পাড়ে এসে ভিড়ল তখন রাত ৮.৩০। আবার ১৫টাকা জনপ্রতি অটো ভাড়া দিয়ে মেইন রাস্তায় আসলাম। ঐইখান থেকে বাসে ২০টাকা জনপ্রতি ভাড়া দিয়ে সীতাকুণ্ড বাজারে আসলাম তখন রাত ৯.৩০। রাতের খাবার সেরে বাজারে ঘুরাঘুরি করে সোজা হোটেলের রুমে। সারাদিনের ক্লান্ত শরীর বিছানায় বিলিয়ে দিয়ে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালাম। কারণ সকাল সকাল উঠতে হবে।
#খৈয়াছড়া_অভিযান_০৫ #TheDeathZoneOfSitakundo
১৮জুলাই সকাল ৭টা। ঘুম থেকে উঠে সব প্যাক করে বের হয়ে নাস্তা সেরে যখন খৈয়াছড়ার দিকে চলতে লাগলাম তখন সকাল ৮টা। যেহেতু আমাদের প্লান অনুযায়ী আমারা রাতে ব্যাক করবো ঢাকা তাই হোটেল ছেঁড়ে দিয়ে শুধু ব্যাগগুলো হোটেল ম্যানেজের কাছে রাখলাম। মেইন রাস্তা থেকে ৩০টাকা জনপ্রতি লেগুনা ভাড়া দিয়ে আরাম করতে করতে খৈয়াছড়া যাবার লিঙ্ক রোডে আমরা। রাস্তা ক্রস করে ১০০টাকা প্রতি সিএনজি ভাড়া করে খৈয়াছড়ার ট্রেইলের কাছাকাছি। এখান থেকেই আসল ট্রেইল শুরু। আমারা ২টা সিএনজি নিয়েছিলাম কারণ আমারা ৮ জন ছিলাম। ট্রেইলের শুরুতেই অনেক খাবার হোটেল আছে। আপনি যদি ফেরার পথে দুপুরের খাবার খেতে চান তাহলে আপনাকে যাবার পথেই অর্ডার করে করে রাখতে হবে। আপনি যা খেতে চান তাই রান্না করে রাখবে তারা। দাম তুলনামূলক অনেক কম। ৪০মিনিট উঁচু নিচু ছোট পাহাড় আর ঝিরি পথ পাড়ি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চারপাশের প্রকৃতি দেখেতে দেখতে যখন খৈয়াছড়ার মূল ঝর্নার কাছে তখন প্রায় ১০টা। রাস্তা কিছুটা দুর্গম আর রিস্কি। তাই সাবধানে হাঁটতে হবে। জোঁক খুবই কম, তারপরেরও সাবধান চলতে হবে। খৈয়াছড়ার সৌন্দর্য আপনার নেশা ধড়াবে। পাগলের মত ইচ্ছা করবে ঝর্নার পানিকে ছুঁতে। উপর থেকে পানি পড়ছে তো পড়ছেই। কোন থামাথামি নাই। এরপর ঝর্নার উপরে উঠার পালা। ২দিন ট্যুরের সব থেকে বিপদজনক আর ভয়ংকর ট্রেইল। পিচ্ছিল আর সোজা খাঁড়া পাহাড় বাওয়া। Death Zone ও বলা যেতে পাড়ে। অসাবধানতা বসত পাহাড় থেকে পরে গেলে মৃত্যু ছাড়া আর কোন উপায় নাই। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা কালে ঝর্নার উপরে না উঠাই ভাল। আবার যাদের হার্ট দুর্বল, উচ্চতা নিয়ে ভয় আছে তাদের না উঠাই উত্তম। অনেক রিস্ক আর সাহস নিয়ে আল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌ করতে করতে উপরে উঠলাম। উঠার পরে মুগ্ধ হয়ে গেলাম যে এত সুন্দর প্রকৃতি কি করে হয়। সামনে ৪ স্টেপ বেয়ে পানি পড়ছে। তার উপরে আর ২ স্টেপ। অহ প্রকৃতির কি লীলাখেলা চলছে তা উপরে না আসলে জানতাম না। তারপর আস্তে আস্তে ৪ স্টেপ উপরে এবং তারও উপরে উঠে খৈয়াছড়ায় নিজেকে বিলাতে লাগলাম। সব ক্লান্তি ধুয়ে দিলাম ঝর্নার পানিতে। তারপর আস্তে আস্তে নিচে নেমে মূল ঝর্নার কাছে আসলাম। মনে রাখতে হবে উপরে উঠা যত কঠিন তার থেকে নামা ২গুন কঠিন। তাই সাবধান। নিচে নেমে গোসল করে একটু রেস্ট নিয়ে যখন ব্যাক করলাম তখন প্রায় ১টা বাজে। পূর্বের অর্ডার দেয়া হোটেলে দুপুরের খাবার শেষ করে একটু রেস্ট নিয়ে আবার ১০০টাকা প্রতি সিএনজি ভাড়া করে মেইন রাস্তায় আসলাম।
#মহামায়া_অভিযান_০৬
তখন বিকেল ৩টা। এবারের গন্তব্য মহামায়া লেক। ৪ বছর আগে শুনেছিলাম মহামায়ার কথা। মিরেরসরাই এর এক ছোট ভাইর কাছ থেকে। তারপর গুগলে খুঁজে দেখছিলাম। আবার দেখি কায়াকিং করা যায়। তাই এর স্বাদ পেতেই আমরা মহামায়া। মেইন রোড থেকে লেগুনায় ১০টাকা জনপ্রতি ভাড়া দিয়ে মহামায়া লিঙ্ক রোডে আসলাম। রাস্তা ক্রস করে ১৫টাকা জনপ্রতি ভাড়া দিয়ে সোজা মহামায়ার গেটে। তারপর ১০টাকা জনপ্রতি টিকেট কেটে ভিতরে ঢুকলাম। পিচঢালা পথ সোজা ভাঁজ হয়ে উপরে উঠে গেছে আর দুপাশে ঝাঁও গাছ সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়ান। মনে হবে আপনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ব্যস্ত তারা। উপরে উঠেই প্রথম লুক দেয়ার পরে যে ভিউ পাবেন তা সত্যিই অসাধারণ। মনে হবে এই ভিউয়ের জন্যই অপেক্ষা করেছেন বহু বছর। প্রথম দেখাই মায়ায় পরে যাবেন। টাইম নষ্ট না করে আমরা প্রতি বোট ২০০টাকা প্রতি ঘণ্টা করে ৪ তা বোট নিয়ে ৮ জন সোজা পানিতে কায়াকিং করার জন্য নেমে পরলাম। অসাধারণ অনুভুতি। লিখে শেষ করা যাবে না। কিছু সুন্দর মুহূর্ত লেকের সাথে কাটিয়ে কখন যে ১ ঘণ্টা পার করলাম তা টেরই পেলাম না। কায়াকিং শেষ করে যখন উঠলাম তখন বিকেল ৪.৪৫। সময় অল্প তাই দেরি না করে সোজা গেটে এসে ১৫টাকা জন প্রতি ভাড়া দিয়ে মেইন রোডে আসলাম। স্টুডেন্ট আইডি থাকলে কায়াকিং ১ ঘণ্টা ২০০ আর ২ ঘণ্টা ৩০০। সাধারনের জন্য ১ ঘণ্টা ৩০০ আর ২ ঘণ্টা ৪০০। একটা আইডি দিয়া একটা বোট ভাড়া করা যাবে। আর একটা বোটে ২ জন উঠা যায়। আপনি চাইলে বড় ইঞ্জন চালিত নৌকা ভাড়া করে লেকে ঘুরতে পারেন। অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন।
#গুলিয়াখালি_সীবিচ_অভিজান_০৭
বিকেল ৫টা। গন্তব্য গুলিয়াখালি সীবিচে। মহামায়ার মেইন রোড থেকে লেগুনায় ৪০টাকা জনপ্রতি ভাড়া দিয়ে সোজা সীতাকুণ্ড মেইন রোডে। রোড থেকে নিচে নেমে প্রতি সিএনজি ২০০টাকা আপ-ডাউন ভাড়া করে সোজা সীবিচে। আমরা একটু বেশি লেট করে ফেলেছিলাম। যখন আমারা সীবিচ তখন প্রায় সন্ধ্য। সীবিচের আসল রুপ দেখতে হলে আপানাকে ৫টার ভিতর থাকতে হবে ওখানে। তাই ট্যুরে সবসময় আপনাকে সময় সচেতন হতে হবে। তাহলেই ঘুরে শান্তি পাবেন। সময় ছিলনা বলে আমরা বীচে যাবার জন্য ৩০০টাকায় আপ-ডাউন ইঞ্জিন চালিত বোট ভাড়া করে বীচে গিয়েছিলাম। অপরূপ সুন্দর। সবুজ ঘাসে মোড়ান পুরো বীচ। মনে হয় কে যেন কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে। আর কার্পেটের মাঝে মাঝে থোকা থোকা পানি জমানো। দেখলেই মন ভরে যায়। ঘাসের উপর হাঁটতে খুব ভাল লেগেছে। আর সূর্য অস্ত টাও অপূর্ব লেগেছে। সন্ধ্যা ৭.৩০ এ ২০ টা জনপ্রতি ভাড়া দিয়ে সোজা সীতাকুণ্ড বাস স্ট্যান্ডে। রাতে বীচে থাকার অনুমুতি নাই। রিস্কি এলাকা। তাই সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা ভাল। গুলিয়াখালি বীচে সিএনজি আপ-ডাউন ভাড়া করে যাওয়াই ভাল যদি আপনি বিকেলে যান। কারণ সন্ধ্যায় পরে কিছু পাবেন না ওখানে। সব বন্ধ হয়ে যায়। সিএনজি ভাড়া দামা দামি করে নিবেন না হলে ওরা বেশিনিবে। তারপর হোটেল থেকে ব্যাগ নিয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে শ্যামলী বাসের টিকেট কেটে বাসের জন্য অপেক্ষা। বাস আসলো। উঠে এক ঘুম। আর কিছু মনে নেই। সকাল ৭টায় যখন ঘুম ভাঙলো তখন ঢাকা মালিবাগ। ঘুম থেকে উঠেই বাসে বসে বসে মনে হল...পাহাড়, ঝর্না আর সমুদ্রের সংমিশ্রনের সীতাকুণ্ডের পরিপূর্ণ এইটা ট্যুরের এখানেই সমাপ্তি হল।
#সতর্কতা
ট্যুরে বসে পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু আমরা করবো না। ময়লা যেখানে সেখানে ফেলবো না। অন্যকেও না ফেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করবো। পরিবেশ আমারদের বন্ধু। তাই তাদের খেয়াল আমাদেরই রাখতে হবে। দিন শেষে সবাই আমরা পরিবেশেরই অংশ। পাহাড়ে অবশ্যই পানি স্যালাইন সাথে রাখুন। বিড়ির ফিলটার যেখানে সেখানে ফেলবেন না।
সিএনজিতে ৫ জন উঠা যায়। কায়াকিং বটে ২ জন উঠা যায়। তাই আপনাকে একটা সংখ্যা নির্বাচন করতে হবে যেটা সব জায়গায় মিলে যায়। তা নাহলে বারতি খরচ হবে। জোর সংখ্যায় যাওয়াই ভাল। যেমন ৪জন , ৮জন, ১০জন। বাশবারিয়া, গুলিয়াখালি সিবীচে আর খৈয়াছড়ার উপরের অংশে গোসল না করাই ভাল। একটি সুন্দর প্লান, একটা সুন্দর ট্যুরের প্রথম উপাদান। কোন প্লেসের পর কোন প্লেসে যাবেন তা আগে থেকেই প্লান করে নিলে পরিপাটি একটা ট্যুর দিতে পারবেন। তা নাহলে টাইম নষ্ট হবে। তাই প্লান করা জরুরি। কোন প্লেসে কতক্ষণ থাকবেন তারও একটা প্লান করে রাখুন। এতে অল্প দিয়ে বেশি প্লেস কভার করতে পারবেন। সময় সচেতন হউন। পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার ট্রাই করুন। মেডিসিন সাথে রাখুন, প্রাথমিক গুোল।



Debota Khum tour Bandarban -খুমের স্বর্গরাজ্য বান্দরবান

খুমের স্বর্গরাজ্য বান্দরবান। আর এই রাজ্যের শ্রেষ্টত্বের মুকুট নিঃসন্দেহে দেবতা খুমের কাছেই যাবে। প্রায় ৬০-১০০ ফুট গভীর এই খুমের দৈর্ঘ্য ৬০০ ফুট। কথিত আছে এই খুমে লুকিয়ে আছে বিশালাকার এক নাম না জানা প্রানী। স্থানীর প্রবীনদের মধ্যে কেউ কেউ একে দেখেছেন বলেও দাবি করে থাকেন। এমন মিথগুলো কিন্তু ভ্রমনের আকর্ষন বাড়িয়ে দেয় বহুগুন।






দেবতা খুমে আসার ঠিক আগেই ছোট্ট একটা খুম আছে যেটার স্থানীয় নাম "পং সু আং খুম"। এই খুমে সাতার কেটে বা খুমের সাথের নব্বই ডিগ্রী এংগেলের দেয়ালের সাথে লেগে থাকা গাছের শিকড় ধরে টারজানের মত ঝুলে ঝুলে আসতে হয় দেবতাখুমে।
দেবতা খুমের ট্রেইল যেমন সুন্দর তেমনি ভয়ংকর। বর্ষায় গিয়েছি বলে ট্রেইলের ঝিরি/পাহাড়ের রূপে যেমন চোখ আটকেছে বারবার তেমনি পিচ্ছিল পাথুরে পথে পা ফসকে বড় ধরনের বিপদে পড়ার আশঙ্কায় বুক দুরুদুরু করেছে প্রতিটা মুহুর্তেই।
কিন্তু প্রকৃতির অনবদ্য রূপ দর্শনের লোভে যারা ঘরছাড়া হয়েছে তাদের কি আর এত ভাবলে চলে! শেষমেশ সব ভয় আর শঙ্কাকে জয় করে পৌছে গেলাম দেবতাখুমে। খুমে পৌছানোর পরের ঘন্টা দেড়েক বাশের ভেলায় ভাসতে ভাসতে কেটে গেছে এক ঘোরের ভেতর।
এখানে যাওয়ার উপায়-
বাংলাদেশের যেকোন যায়গা থেকে বান্দরবান। সেখান থেকে বাস/চাদের গাড়ি/সি এন জি/ মটর সাইকেলে করে রোয়াংছড়ি (৪০-৫০ মিনিটের পথ)। সেখান থেকে সি এন জি/ মটর সাইকেলে কচ্ছপতলী বাজার (৩০ মিনিটের পথ)। তারপর পায়ে ঘন্টা দেড়েক হাটলেই দেবতাখুম।

খরচপাতি-
ঢাকা থেকে বান্দরবান এর বাস ভাড়া -৬২০ টাকা জনপ্রতি (নন এসি বাস);
বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ি বাস ভাড়া-৬০ টাকা জনপ্রতি।
রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী সিএনজি ভাড়া কত ঠিক মনে নেই। তবে একটা সিএনজির ভাড়া আনুমানিক ১৫০-২০০ এর মধ্যেই হয়ে যাওয়ার কথা।
৪ টা ভেলার জন্য মোট ১২০০ টাকা নিয়েছিলো আমাদের কাছ থেকে।
আর গাইডের খরচ মোট-৫০০ টাকা।
বিঃদ্রঃ
১। কচ্ছপতলীতে গিয়ে গাইডসহ আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে।
২। দেবতাখুমে ঘুরার জন্য ভেলার ব্যাপারে গাইডকে আগেই বলে রাখা উত্তম।
৩। দেবতাখুম যাওয়ার পথে শীলবান্ধা ঝর্না নামে একটা ঝর্না পাবেন। যাওয়ার পথে ঝর্নাটা দেখে যেতে ভুলবেন না।
৪। বর্ষাকালেই খুমের আসল সৌন্দর্য দেখা যায়। তবে শীলবান্ধা ঝর্নার পরের ট্র্যাকিং টা খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে কারন ঝিরিপথ খুবই পিচ্ছিল থাকে। তাই এই ব্যাপারে আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা ভালো।
দেবতাখুম খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটা যায়গা। দয়াকরে কেউ সেখানে ঘুরতে গিয়ে কোন ধরনের ময়লা ফেলে জায়গাটা নোংরা করবেন না।
Tushar Khan    


alikadam bandarban tour-আলীকদম, বান্দরবান

আলীকদম, বান্দরবান।
ভ্রমণের সময়: ৫ জুলাই ২০১৮।।
ভ্রমণের সঙ্গী : ২ জন
গাইড : মেনাঙ লিং (উনার সাথে পুরো পথ তাতেই মনে হচ্ছিলো কোরিয়ান মুভি দেখতেসি সাবটাইটেল ছাড়া )

যাতায়াত:
যাওয়া :ঢাকা ->আলীকদম->থিংকুপাড়া আর্মি ক্যাম্প (নাম এন্ট্রি) ->১৭ কি,মি->আদুপাড়া - >মেম্বারপাড়া->থুকঅ পাড়া ->ব্যাঙ ঝিরি->কাখই পাড়া।পাড়ার কাছে পাবেন দানবীয় দামতুয়া ঝর্না।।
আসা : আদুপাড়া -> ডিম্ পাহাড় -> থিংকুপাড়া আর্মি ক্যাম্প ->আলীকদম -ঢাকা
(১৭ কিলো থেকে গাইড নিয়ে তুক'অ দামতুয়া ট্রেকিং করে আসতে প্রায় ৫/৬++ ঘন্টা লাগবে,যেহেতু আমরা ২ জন ছিলাম আমরা অনেক তাড়াতাড়ি ট্রেক কমপ্লিট করতে পেরেছি ।হাটার সময় প্রয়োজনীয় পানি আর শুখনা খাবার সাথে নিয়ে নিবেন,আমরা না খেয়ে ট্রেক করতে অনেক অসুবিধা পোহাতে হয়েছে )
আমরা আদুপাড়া-১১:৩০ এর কিছুক্ষন পরে পৌছাই মোটরসাইকেল থেকে নেমেই আমরা গাইড খুজি ও পরে গাইড নেই গাইডের নাম মেনাঙ লিং। তো মেনাঙ লিং দাদাকে নিয়ে আদু পাড়া থেকে কাখই পাড়ার কাছে তুক-অ ঝর্না দেখার জন্য ১১:৫০+ মিনিটে রওনা হই। আমাদের দাদা এমন যে উং অং চুং ছাড়া আমি কিছুই বুঝি নাই  , তাকে যতই বলি আর কত্তোক্ষন সে বলে চিউং অং মং ?? যাই হোক কোরিয়ান দাদা র সাথে তাল মিলাতে মিলাতে আমরা ২.২০ এর পর কাখই পাড়ায় পৌছাই এবং ঝর্নায় চলে যাই। সমস্যা হলো এখানে বিগত ২ দিনের বৃষ্টি ও আদুপাড়া থেকে নামা বৃষ্টি ট্রেইলের অবস্থানই পরিবর্তন করে দিছে মেম্বার পাড়া থেকে কাখই পাড়া আসতে ব্যাঙ ঝিড়িতে অনেকবার এপাশ থেকে ওপাশ যেতে হয়েছে আমাদের পানিও খুব ভালো ছিলো, পানির স্রোতও ভালো ছিলো কিন্তু পাথর না থাকায় কোনো সমস্যাই হয়নি পাড় হতে ঝর্নায় যাওয়া শেষের ঝিরিতে গেলাম আটকা খেয়ে পাড় হতে গিয়ে আমার বন্ধু কাখাই পাড়া থেকে ব্যংঝিরি র ঢালে পরে গিয়ে অনেক বড় মারাক্তক ইঞ্জুরির হাত থেকে রক্ষা পেলো। এরপর খুব দ্রুত ঝর্নায় চলে গেলাম গিয়ে তো আমি বেহুস 😱😱 এ আমি কি দেখি?? বিশাল দানবের সামনে আমি! কিছুক্ষনের জন্য আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম, পরে হালকা বৃষ্টি মাথা নিয়েই মোবাইল টা বের করে আগে ঝর্নাটার ভিডিও করলাম। এরপর ২/১ টা ছবি তুলেই দৌড়...
ফেরার পথে দানবীয় ঝর্ণা র কামরূপ কামাখ্যা ব্যাখা করতে করতে আমরা ০৪:৩০ এর দিকে আদুপাড়া পৌঁছাই । তখন আমাদের যে মোটর বাইক দিয়ে এনেছে জাফর উনাকে বললাম চলেন মেঘের চূড়ায় স্নান করে আসি সাথে ডিম্ পাহাড় এ সন্ধ্যা টা কাটাবো , সে যদিও নিমরাজি তবু জোর করে রাজি করালাম এরপর আরো ৬ কিঃমিঃ গিয়ে আলীকদম এর সবচেয়ে উঁচু চূড়ায় মেঘের সাথে স্নান করে ,ডিম্ পাহাড় এ গিয়ে ডিম্ আর চা খেলাম সন্ধ্যা দেখতে দেখতে । এইদিকে আমাদের থিংকুপাড়ার আর্মি অফিসার ফোন দিতে দিতে অস্থির,পরে অবশ্য আমরা দেরি হবার জন্য তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি ফোন এ। এরপর আলীকদম এসে আমরা শ্যামলী তে টিকেট কেটে ঢাকা র উদেশ্যে রওনা দেই ।
আমাদের ২জনের খরচের হিসাব টা হলো
ঢাকা-আলীকদম : ৮৫০*২=১৭০০/- (শ্যামলী ওর হানিফ )
আলিকদম-আদুপাড়া মোটরসাইকেল=৩০০*২ =৬০০
গাইড ফি=৬০০/- 😊
সেই হিসেবে আমাদের মোট খরচ হয় ২৯০০/- টাকা + খাবার খরচ। খাবার খরচ আপনি যেভাবে করতে চান ইচ্ছে। বড় গ্রুপ হলে ২৫০০-- এ এ ট্যুর দিয়ে আশা সম্ভব
বি.দ্র : আমরা কোনো ময়লা পাই নি দামতুয়া ঝর্ণা তে , আমাদের এটা অনেক ভালো লেগেছে ।আশা করবো যারা যাবে তারাও কেউ ময়লা ফালাবে না