খুমের স্বর্গরাজ্য বান্দরবান। আর এই রাজ্যের শ্রেষ্টত্বের মুকুট নিঃসন্দেহে দেবতা খুমের কাছেই যাবে। প্রায় ৬০-১০০ ফুট গভীর এই খুমের দৈর্ঘ্য ৬০০ ফুট। কথিত আছে এই খুমে লুকিয়ে আছে বিশালাকার এক নাম না জানা প্রানী। স্থানীর প্রবীনদের মধ্যে কেউ কেউ একে দেখেছেন বলেও দাবি করে থাকেন। এমন মিথগুলো কিন্তু ভ্রমনের আকর্ষন বাড়িয়ে দেয় বহুগুন।
দেবতা খুমে আসার ঠিক আগেই ছোট্ট একটা খুম আছে যেটার স্থানীয় নাম "পং সু আং খুম"। এই খুমে সাতার কেটে বা খুমের সাথের নব্বই ডিগ্রী এংগেলের দেয়ালের সাথে লেগে থাকা গাছের শিকড় ধরে টারজানের মত ঝুলে ঝুলে আসতে হয় দেবতাখুমে।
দেবতা খুমের ট্রেইল যেমন সুন্দর তেমনি ভয়ংকর। বর্ষায় গিয়েছি বলে ট্রেইলের ঝিরি/পাহাড়ের রূপে যেমন চোখ আটকেছে বারবার তেমনি পিচ্ছিল পাথুরে পথে পা ফসকে বড় ধরনের বিপদে পড়ার আশঙ্কায় বুক দুরুদুরু করেছে প্রতিটা মুহুর্তেই।
কিন্তু প্রকৃতির অনবদ্য রূপ দর্শনের লোভে যারা ঘরছাড়া হয়েছে তাদের কি আর এত ভাবলে চলে! শেষমেশ সব ভয় আর শঙ্কাকে জয় করে পৌছে গেলাম দেবতাখুমে। খুমে পৌছানোর পরের ঘন্টা দেড়েক বাশের ভেলায় ভাসতে ভাসতে কেটে গেছে এক ঘোরের ভেতর।
এখানে যাওয়ার উপায়-
বাংলাদেশের যেকোন যায়গা থেকে বান্দরবান। সেখান থেকে বাস/চাদের গাড়ি/সি এন জি/ মটর সাইকেলে করে রোয়াংছড়ি (৪০-৫০ মিনিটের পথ)। সেখান থেকে সি এন জি/ মটর সাইকেলে কচ্ছপতলী বাজার (৩০ মিনিটের পথ)। তারপর পায়ে ঘন্টা দেড়েক হাটলেই দেবতাখুম।
বাংলাদেশের যেকোন যায়গা থেকে বান্দরবান। সেখান থেকে বাস/চাদের গাড়ি/সি এন জি/ মটর সাইকেলে করে রোয়াংছড়ি (৪০-৫০ মিনিটের পথ)। সেখান থেকে সি এন জি/ মটর সাইকেলে কচ্ছপতলী বাজার (৩০ মিনিটের পথ)। তারপর পায়ে ঘন্টা দেড়েক হাটলেই দেবতাখুম।
খরচপাতি-
ঢাকা থেকে বান্দরবান এর বাস ভাড়া -৬২০ টাকা জনপ্রতি (নন এসি বাস);
বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ি বাস ভাড়া-৬০ টাকা জনপ্রতি।
রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী সিএনজি ভাড়া কত ঠিক মনে নেই। তবে একটা সিএনজির ভাড়া আনুমানিক ১৫০-২০০ এর মধ্যেই হয়ে যাওয়ার কথা।
৪ টা ভেলার জন্য মোট ১২০০ টাকা নিয়েছিলো আমাদের কাছ থেকে।
আর গাইডের খরচ মোট-৫০০ টাকা।
বিঃদ্রঃ
১। কচ্ছপতলীতে গিয়ে গাইডসহ আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে।
২। দেবতাখুমে ঘুরার জন্য ভেলার ব্যাপারে গাইডকে আগেই বলে রাখা উত্তম।
৩। দেবতাখুম যাওয়ার পথে শীলবান্ধা ঝর্না নামে একটা ঝর্না পাবেন। যাওয়ার পথে ঝর্নাটা দেখে যেতে ভুলবেন না।
১। কচ্ছপতলীতে গিয়ে গাইডসহ আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে।
২। দেবতাখুমে ঘুরার জন্য ভেলার ব্যাপারে গাইডকে আগেই বলে রাখা উত্তম।
৩। দেবতাখুম যাওয়ার পথে শীলবান্ধা ঝর্না নামে একটা ঝর্না পাবেন। যাওয়ার পথে ঝর্নাটা দেখে যেতে ভুলবেন না।
৪। বর্ষাকালেই খুমের আসল সৌন্দর্য দেখা যায়। তবে শীলবান্ধা ঝর্নার পরের ট্র্যাকিং টা খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে কারন ঝিরিপথ খুবই পিচ্ছিল থাকে। তাই এই ব্যাপারে আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা ভালো।
দেবতাখুম খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটা যায়গা। দয়াকরে কেউ সেখানে ঘুরতে গিয়ে কোন ধরনের ময়লা ফেলে জায়গাটা নোংরা করবেন না।